বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫

জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দু”গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ

 

জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। প্রথমে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র ও হাতবোমাসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় মুহুর্মুহু হাতবোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে ১০ জন মারান্তক আহত হয়েছে। আহতদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা দেয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক জাজিরা উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আ: কুদ্দুস বেপারী গ্রুপ ও একই ইউণিয়নের নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী, সাবেক জাজিরা উপজেলা যুবলীগের সদস্য আ: জলিল মাদবর গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১ জনকে আটক করেছে জাজিরা থানার পুলিশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজ শনিবার সকালে জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের স্টাপল্টন, বুধাইর হাট বাজার, বিলাসপুর বাজার ও চেয়ারম্যান আ: কুদ্দুস বেপারীর বাড়ির আশে ৪টি স্থানে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র সন্ত্র এবং হাতবোমা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চালাতে থাকে এ সময় দু”গ্রুপের সমর্থকরা মুহুর্মুহু হাতবোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে উভয় পক্ষ এদিন অন্তত ৫ শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ পুরো বিলাশপুর এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

কয়েক ঘন্টা ব্যাপি দফায় দফায় চলে এই সংঘর্ষ। হাতবোমা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে মিয়া চান বেপারী (৪০), গিয়াস চৌকিদার(৪৩), আতাউর রহমান ( ৩৬), মিজানুর রহমান (৫০), আতিক বেপারী(৪৬), নেয়াবালী বেপারী(৫০), মলাই মালের স্ত্রী আমেনা বেগম (৪৮), জাকির হোসেন(৬৪)সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা স্থানীয়রা। আহতদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে সকাল ৮ টা থেকে বেলা ১০ টা পর্যন্ত জাজিরা থানা পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে উভয় পক্ষের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দিলে সংঘর্ষ থেমে যায়। এই ঘটনায় কবিরাজ কান্দির জালাল কবিরাজের ছেলে শান্ত কবিরাজ(১৬) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান আ: কুদ্দুস বেপারী গ্রুপ এবং গত বছরের (১৫-জুন) ইউপি নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আ: জলিল মাদবর গ্রুপের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। (২৫-ফেরুয়ারী) শনিবার ভোর থেকে সকালের শেষ পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ হয়। এর আগে গত (২৩-জানুয়ারী) এবং (১৫-ফেরুয়ারী) তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দ্বিতীয়বার সংঘর্ষের ঘটনায় ৩টি মামলা হয়েছে ।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আ: কুদ্দুস বেপারী এবং পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আ: জলিল মাদবরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বহু চেষ্টা করা সত্বেও তা সম্ভব হয়নি। এমনকি তাদের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি। তবে চেয়ারম্যান আ: কুদ্দুস বেপারীর ছোট ভাই সিদম বেপারী জানান, ভোর রাতে অন্ধকারের মধ্যে আ: জলিল মাদবরের লোকজন হঠাৎ করেই আমাদের বাড়িতে এসে অতর্কিত হামলা চালায়। এর দু”গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা সকালে সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে স্টাপল্টন, বুধাইর হাট বাজার এবং চেয়ারম্যান আ: কুদ্দুস বেপারীর বাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন পয়েন্টে সংঘর্ষে জড়িতদের লাঠিচার্জ করে এবং ৬টি টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে সংঘর্ষ বন্ধ করতে সক্ষম হই। এই ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।