
বাড়িতে বিদ্যুৎ আসায় আনন্দের বন্যা বইছে সুবিধাবঞ্চিত এসব চরাঞ্চলে। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ছেলে-বুড়োসহ সর্বস্তরের মানুষ।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থেকে এই বিদ্যুৎ আসছে। একটি গ্রামের ১২০ বাড়িতে সংযোগ দেওয়ার পর শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়।
শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখীপুর) আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পাদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমসহ বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জ পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক এএসএম মোবারক উল্লাহ বলেন, পদ্মার এই চরগুলো শরীয়তপুরের অন্তর্ভুক্ত হলেও মুন্সীগঞ্জের কাছাকাছি। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে পদ্মার নিচে দিয়ে প্রায় আড়ই কিলোমিটার তার দিয়ে চরগুলোতে বিদ্যুৎ নেওয়া হয়েছে।
“প্রাথমিকভাবে নওপাড়া গ্রামের ১২০ বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। চলতি বছর ২০ হাজার বাড়িতে সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।”
বাড়িতে বিদ্যুৎ পেয়ে উচ্ছ্বসিত নওপাড়া গ্রামের ৬০ বছর বয়সী সোবহান ঢালী। কৃষিকাজ করে জীবিকা চালান তিনি।
সোবহান ঢালী শরীয়তপুর চোখকে বলেন, “খুব ভাল লাগতিছে, ভাই। পরিবারের সবাই ম্যালা খুশি। গ্রামের সবাই খুশি। সবাইর মনে ঈদের মত আনন্দ।”
দ্বীপের মত এসব গ্রামের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়ে তুলেছে কিছু স্কুল, কিছু রাস্তাঘাট ও মসজিদ-মাদ্রাসা।
নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাসেল আজগর সোহেল মুন্সী বলেন, অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে এসব চরে গ্রাম গড়ে উঠেছে। গ্রামের মানুষ পদ্মায় মাছ ধরে, চরের জমিতে কৃষিকাজ করে জীবিকা চালায়।
“আধুনিক জীবনযাপনেরর কোনো সুযোগ-সুবিধা এখানে ছিল না। বিদ্যুৎ আসায় মানুষ খুব খুশি হয়েছে।”
তার ইউনিয়নে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস করে বলে তিনি জানান।
শনিবার আনুষ্ঠানিক বিদ্যুৎ সয়যোগের আগে উপমন্ত্রী শামীম নওপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মুন্সি আজিজুল হক উচ্চ বিদ্যালয়, চরআত্রা আজিজুয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়া তিনি ওই ইউনিয়নে মুন্সি আলিমুজ্জামান রতন সড়ক উদ্বোধন করেন।
উপমন্ত্রী বলেন, গত সংসদ নির্বাচনের আগে চরাঞ্চলের মানুষ বিদ্যুৎ দাবি করলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আমি চরাঞ্চলের মানুষের জন্য পদ্মার তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আনার উদ্যোগ নিই। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। কৃতজ্ঞতা জানাই যারা বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছেন।”