
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৯ মাস অপেক্ষার পর পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে থেকে এ মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়েছে। ১০-১২ মিনিটে পদ্মা সেতু দিয়ে পদ্মা পার হয়ে আনন্দ উল্লাস করছেন মোটরসাইকেলআরোহীরা।
ঈদে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে গত মঙ্গলবার একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
আজ সকালে সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল শুরুর আগে থেকেই মাওয়া প্রান্তে ঈদমুখি মোটরসাইকেল আরোহীদের ভিড় জমে যায়। সেতু কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে সুশৃঙ্খলভাবে তারা সেতু পারাপার হচ্ছেন।
জানা যায়, গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। ২৬ জুন সকাল থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। ওই দিনই রাতে বেপরোয়া মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুতে দুজন নিহত হন। দুর্ঘটনা এড়াতে ২৭ জুন ভোর ৬টা থেকে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পদ্মা সেতুতে টোল পরিশোধ করে ফের মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়।
সেতু দিয়ে চলাচলের জন্য বাইক সার্ভিস লেন তৈরি করা হয়েছে। পদ্মা আর জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় বৃদ্ধি করা হয়েছে আরও তিনটি লেন।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার লোংশিং বাসিন্দা মিজানুর রহমান মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হওয়ার জন্য ঢাকার বনশ্রী থেকে সেহেরী সময় রওনা হন। মাওয়া প্রান্তে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে পদ্মা সেতুতে ওঠার সুযোগ পান।
কাগদী গ্রামের আনোয়ার দেওয়ান বলেন, আমরা ট্রলারে পদ্মা নদী পারাপার হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেছি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চালাতে পারব না, ভাবলেই কষ্ট হতো। আজ মোটরসাইকেল নিয়ে সেতু পেরিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। এতে অনেক আনন্দ লাগছে।
সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে প্রথমবার মোটরসাইকেলে করে পদ্মা সেতু পেরিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন জিল্লু সরদার। তিনি পালং ইউনয়নের কোটাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ঢাকার মোহাম্মদপুরে ব্যবসা করেন।
মো. জিল্লু সরদার বলেন, জীবনের প্রথম মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হলাম। প্রায় ১৩ মিনিটে সেতু পার হয়েছি। অনেক আনন্দ লাগছে। ঈদের যাত্রা দুর্ভোগমুক্ত করার জন্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে কৃতজ্ঞ প্রকাশ করছি।
পদ্মা দক্ষিণ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকাল থেকে বাইকের ভিড় দেখে আমরা অবাক হয়েছি। শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা কাজ করছি। তবে বাইকারদের চালকরা শৃঙ্খলা সঙ্গে চালাচ্ছেন।