
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় মাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের স্বামী বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় ছেলের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন বলে ওই থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান।
আসামি মেহেদী হাসান ওরফে জাহিদ মাঝি (২৫) উপজেলার ঘড়িষার ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী মো. সেলিম মাঝির বড় ছেলে।
মামলায় বলা হয়, গত বুধবার রাতে জাহিদ তার মা নারগিছ বেগমকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করেন।
জাহিদকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার বাজারে সেলিম মাঝির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। পাশেই এক বাড়িতে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে থাকেন। বুধবার দুপুরে তার স্ত্রী একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিকালে বাড়ি ফেরেন। সেলিম মাঝি ও মেজ ছেলে নাহিদ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। আর ছোট ছেলে স্কুলে ছিল।
পুলিশ আরও জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বড় ছেলে জাহিদ ঘরের দরজা বন্ধ করে মায়ের চোখে মরিচের গুঁড়ো ছুড়ে মারেন। এরপর বঁটি দিয়ে মাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেন। খবর পেয়ে মো. সেলিম মাঝি এসে ঘরের দরজা ভেঙে স্ত্রীকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, করোনার সময় জাহিদ মাঝি তার ফেইসবুকে জঙ্গিদের পোস্ট শেয়ার করেন। জঙ্গিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে সন্দেহে তখন র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে বাবা সেলিম মাঝি তাকে জামিনে ছাড়িয়ে নেন।
ওইসব কাজে ছেলেকে বাধা দেওয়ায় জাহিদ মাকে কুপিয়ে হত্যা করতে পারে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।
সেলিম মাঝি বলেন, “ছেলে কেন এমন করল, আমরা বুঝতে পারছি না। ২০২১ সালে একটি মামলায় র্যাব ওকে গ্রেপ্তার করে। মামলাটি জঙ্গি তৎপরতা নাকি হেফাজতের সঙ্গে কোনো ঘটনা, তা আমার জানা নেই। সে সময় সাত মাস কারাগারে থাকার পর ওই মামলায় ছেলে জামিন পায়। তখন থেকে তাকে আমাদের কাছে রেখেছিলাম। সে বাড়িতে আলাদা একটি কক্ষে থাকত, নামাজ-রোজা করত।”
এ ঘটনায় ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে জাহিদকে বলতে শোনা যায়, “আমার পেছনে আমার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছিল। দ্বীন থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে রাখায় আমি মেরেছি।”
নড়িয়া থানার ওসি বলেন, “আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার আচরণ অসংলগ্ন। তার মানসিক সমস্যা থাকতে পারে।”