রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫

শরীয়তপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীর জমি দখলের অভিযোগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, মালামাল লুট

 

শরীয়তপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে প্রায় ৮ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে মালামাল লুটপাট করা হয়। জমির মালিক কামরুন্নাহার মিনু এ অভিযোগ করেছেন।

তবে কাউন্সিলর জানিয়েছেন, বারবার দরবারের তারিখ দিয়ে ও প্রতিপক্ষ দরবারে হাজির হচ্ছে না এবং তার কেনা জমির সীমানা বুঝিয়ে দিচ্ছে না। তাই তিনি ওই জায়গা থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করেছেন।

জানা যায়, সদর উপজেলার ৬০নং পালং মৌজার বিআরএস ৪৬৭ খতিয়ানের ৩১০২ নং খতিয়ানের ০.২৯৯৯ শতাংশ জমির ওপর টিন দিয়ে ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সরকারের খাজনা পরিশোধ করে মরহুম সিরাজুল হক কোতোয়ালের স্ত্রী কামরুন্নাহার ও তার একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে টিটু কোতোয়াল ব্যবসা করছিলেন। শুক্রবার সকালে কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া ৫০-৬০ জন যুবক ও দলীয় কর্মী নিয়ে এসে জোরপূর্বক জমি জবর দখল এবং ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। এতে ১৫-২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জমির মালিক কামরুন্নাহার মিনু বলেন, ওই জমি আমার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া। আমি অসহায় বিধবা নারী। আমার একমাত্র সন্তান টিটু প্রতিবন্ধী। জমিতে দোকানপাট তুলে নিজের নামে মিটার দিয়ে জমির খাজনাদি পরিশোধ করে ব্যবসাবাণিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কাউন্সিলর আমার জমি দখল করেছে। সেখানে থাকা ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফার্নিচারের মালামাল, রিকশা গ্যারেজের মালামাল ও চায়ের দোকানের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে।

কামরুন্নাহারের ছেলে টিটু কোতোয়াল বলেন, আমি প্রতিবন্ধী বলে কেউ আমাকে সাহায্য করছে না। আমি অসহায়। আদালত এ জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করা সত্ত্বেও তা অমান্য করে জোরপূর্বক আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি ৩১০১ নং দাগের জমি ক্রয় করেছি। টিটু ও তার মা কামরুন্নাহার আমার জমিতে দোকানপাট তুলে ব্যবসাবাণিজ্য করছে। বারবার দরবার করে তাদের জমি মেপে সীমানা নির্ধারণের জন্য বলা হলেও তারা তোয়াক্কা করছে না। তাই আমি আমার জায়গা থেকে ঘর সরিয়ে দিয়েছি।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকতার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙা শেষ। মালামাল নেই। কাউকে না জানিয়ে জোরপূর্বক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙা ঠিক হয়নি। আমি উভয়ের কাগজপত্র দেখে পরিমাপ করে মীমাংসা করে দিতে চেষ্টা করব। মীমাংসা করতে ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।