
শরীয়তপুর গোসাইরহাট উপজেলার এল’জিই.ডির নলমূড়ি ইউনিয়নের সড়কের চরভূয়াই কালাম দেওয়ান নামক বাজারে স্থানে নির্মাণাধীন পিএসসি গার্ডার ব্রিজের কাজ এক বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২ বছরেও শেষ হয়নি।
স্থানীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল কালাম দেওয়ান বাজার স্থানে একটি টেকসই ব্রিজের। সেই দাবির প্রেক্ষিতে সরকারের শক্তিশালী করণ প্রকল্প উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৪ হাজার ৯২০ টাকা ব্যয়ে ১৬ মিটার দৈর্ঘ্যরে পিএসসি গার্ডার ব্রিজের কাজটি শরীয়তপুরের নোনা এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পায়।
২০২১ সালের জুন মাসের ১৬ তারিখে কাজটি শুরু হয়ে ২০২২ সালের ১৭ মে মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ৫-৬ মাস কাজটি শুরু করে অজ্ঞাত কারণে ফেলে রেখে উধাও হয়ে যায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) কাগজপত্রে ২৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন দেখালেও উপজেলার নলমুড়ি ইউনিয়নের কালাম দেওয়ান বাজারের ভুয়াই নামক স্থানে নির্মাণাধীন ঢাকা ডিভিশনের আর. ডব্লিউ. এস. পি. কালভাট ব্রিজটির বাস্তবে মাত্র কয়েক অংশ পিলার, পাইলিং হয়েছে। কাজ ফেলে ঠিকাদার এখন লাপাত্তা। বারবার তাগাদা দিলেও ঠিকাদার এলাকায় আসছেন না। এতে প্রায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে ব্রিজের দুই পাশে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্তত ১৫-১৬টি গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা , মিলন মাঝী, মিজান চাপরাশি সহ অনেকেই জানান, ভুয়াই বাজারের ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় খুনেরচর. আবুপুর. স্কুলেরহাটা. চরপদ্মা মাদ্রাসাবাজার হাটুরিয়া. হিজলা মুলাদী ভেদররিয়াখেয়া ঘাট সফিপুরসহ অন্তত পক্ষে ১৫-১৬টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এই এলাকার মানুষ গোসাইরহাট শরীয়তপুর সহ বরিশামশহরে বা অন্য এলাকায় যেতে চাইলে ২০-২৫ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে অর্থ ও সময় দুটোই বেশি ব্যয় হচ্ছে।
স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী মানিক ও মাসুদ বলেন, দুই পাশে পাকা সড়ক থাকলে ওই ব্রিজের কারণে যানবাহন চলতে না পারায় কোনো মালামাল পরিবহন করা যাচ্ছে না। হাটবাজারগুলোতে আসতে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
৩০নং চরমনপুরার সহকারী শিক্ষক মেহেদি হাসান সহ কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ব্রিজটি সম্পন্ন না হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় স্থানীয় স্কুল-কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না।
স্কুল ও মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন প্রতিদিন এই রাস্তা আমাদের যাতায়ত করি বৃষ্টি বর্ষায় অনেক সমস্যা হয় অতি দ্রত ব্রিজটি সম্পুর্ন হলে আমরা স্বাচ্ছন্দে বাড়িতে যেতে পারবো।
নলমূড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মিঞা বলেন, ব্রিজটি দুই বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে যাতায়াতের জন্য বিকল্প রাস্তা বিপদজনকভাবে মাটিফেলে রাখা হয়েছে, আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইউনিয়নের উন্নয়নমূল্যক কাজ পরিদর্শন করতে যেতে হয় ঐ ব্রিজটি না হওয়ায় পার্শ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মটরসাইকেলে দুইবার দুর্ঘটনায় কবলে পড়তে হয়েছে। ব্রিজটির না হওয়ার কারনে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। ওই সড়ক ব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদে উপকারভোগী, বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীদের আসা-যাওয়া করতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিকল্প সড়ক ঘুরে অনেক সময় লেগে যায়। বৃদ্ধ মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নোনা ট্রেডাসের আবু সুফিয়ান বলেন. আমি আমার লাইসেন্সে কাজ পাওয়ার দুইমাস পরে ওয়ার্কাটার পেয়ে কাজশুরু করি এরপরে ডিজাইন পরিবর্তনের কারনে কাজটি আর করতি পারিনি। ঢাকা ডিভিশন অফিসে ডিজাইন পরিবর্তন করে দিলে আমি আবার কাজ শুরু করতে পারবো।
ডিজাইনের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ঢাকা অফিসে চিঠি দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী গোসাইরইাট উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী সজল কুমার দত্ত জানান, বক্স কালভাট ব্রিজটির ডিজাইন পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিস্ট উর্দ্ধতম কতৃপক্ষ বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে এখোন অনুমোদন হয়ে আসেনি। আসলে পুনরায় কাজ শুরু করা যাবে।
তিনি আরও জানান, বর্ষা মৌসুম ভোগান্ত লাঘবের স্বার্থে কাজটি চলমান রাখার জন্য বিভিন্ন সময়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে।