
শরীয়তপুরে পুকুরে ডুবে সোহেল বয়াতী (৯) ও সাদিকুল ইসলাম (১২) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার ধানুকা এলাকায় সরকারি শিশু পরিবারের পুকুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল বয়াতী ডামুড্যা উপজেলার চর গঙ্গেস কাঠি এলাকার মৃত আলী আহম্মদ বেপারীর ছেলে ও সাদিকুল ইসলাম গোসাইরহাট উপজেলার চর জালালপুর এলাকার মৃত মাহমুদুল হাসানের ছেলে।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোহেল বয়াতীর বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই এবং সাদিকুল ইসলামের বাবা মারা গিয়েছেন। তারা দুজনই শরীয়তপুর শহরের সরকারি শিশু পরিবারে থাকতো। বুধবার অন্যান্য শিশুরা শ্রেণিকক্ষে চলে গেলে সোহেল ও সাদিকুল সকলের অগোচরে সরকারি শিশু পরিবারের অস্থায়ী টিনশেড ভবনের পেছনের পুকুরে গোসলে নামে। তবে তারা সাঁতার না জানায় ডুবে যায়।
পরে সেখানকার সহকারী তত্ত্বাবধায়ক শিশু দুটির খোঁজ না পেয়ে চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে পুকুরঘাটে তাদের জামাকাপড় দেখে সকলে মিলে পুকুরের পানিতে নামলে দুজনকে একসঙ্গে উদ্ধার করেন। পরে দ্রুত উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সাদিকুল ইসলামের মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার দুলাভাই মারা যাওয়ার পর ভাগনেকে গত মাসে শিশু পরিবারে দেওয়া হয়। আজ দুপুরের দিকে সেখান থেকে মোবাইলে ফোন করে আমাকে হাসপাতালে আসতে বলে। আমি হাসপাতালে আসার পর জানতে পারি আমার ভাগনেসহ আরেক শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেখানকার কর্তৃপক্ষ যদি শিশুদের ঠিকঠাকভাবে দেখাশোনা করতো তাহলে আমার ভাগনে আজ বেঁচে থাকতো।
নিহত সোহেল বয়াতীর ফুপাতো বোন মাকসুদা বেগম বলেন, সোহেলের মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। ওর জন্য যে কেউ কান্না করবে এমন কোনো কাছের লোকও নেই। কয়েক মাস আগে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ওকে সরকারি শিশু পরিবারে দেওয়া হয়। আজ মোবাইলে জানতে পারি আমার ভাই মারা গিয়েছে। আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসি।
সরকারি শিশু পরিবারের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মান্নান হাওলাদার বলেন, ভেতরে পানির কল আছে, বাচ্চারা সেখানেই গোসল করে। আজ অন্য শিশুরা সবাই ক্লাসে ছিল। আমি ওদের বারান্দায় খেলতে দেখে কাজ করতে অফিসে যাই। পরে এসে ওদের দেখতে না পেলে চারদিকে খোঁজখুঁজি শুরু করি। পরে পুকুরের পানি থেকে ওদের উদ্ধার করি।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মানসুরা ইসলাম বলেন, পানিতে পড়া দুটি শিশুকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে তারা দুজনই মৃত ছিল।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।