
শরীয়তপুরের জাজিরা থানার কাছাকাছি এলাকায় পৌরসভার শাহি মসজিদের কাছে দিনে-দুপুরে এক শিক্ষককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দূর্বৃত্তরা। (১৭-অক্টোবর) মঙ্গলবার দুপুরে জাজিরা বাজার থেকে গোডাউন মোড় অবস্থিত হামলার শিকার ঐ শিক্ষকের ভাড়া বাসায় আসার সময় এই ঘটনাটি ঘটায় দূর্বৃত্তরা। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি কিংবা কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।
পুলিশের দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পায়নি তারা। হামলার শিকার শিক্ষক করিম বেপারী(৩৮) সেনেরচর চরধুপুরিয়া ভোলাই মুন্সির কান্দি গ্রামের মৃত ক্বারী মোহাম্মদ আলী বেপারীর ছেলে। স্থানীয়ভাবে আধিপত্য নিয়ে ঝামেলা এরিয়ে চলার স্বার্থে তিনি দীর্ঘদিন যাবত জাজিরা পৌরসভার গোডাউন মোড় এলাকার সিরাজ জমাদ্দারের বাড়িতে ভাড়া থেকে ব্যবসা করেন। কিন্তু মঙ্গলবার জাজিরা থানার মাত্র কয়েকশত মিটারের মধ্যেই তিনি এই হামলার শিকার হন।
সেনেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল জমাদ্দার জানান, দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় মন্টু বেপারিদের সাথে এমদাদ মদবরদের সাথে আধিপত্য নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। আহত করিম বেপারীর পরিবার এমদাদ মাদবরের দলের সাথে জড়িত রয়েছেন। তবে তিনি এখানে দীর্ঘদিন যাবত অবস্থান করেননা, বরং তিনি জাজিরায় ভাড়া থাকেন। এই অবস্থায় তার উপর হামলা করাটা সমীচীন হয়নি। মন্টু বেপারি ইতিপূর্বেই হত্যা মামলার আসামি বলেও তিনি জানান।
আহত শিক্ষক করিম বেপারীর ভাই সালাম বেপারী জানান, আমার ভাই সবসময়ই মারামারি থেকে দূরে থাকেন। আর এই জন্যই তিনি এলাকায় না থেকে জাজিরায় ভাড়া থাকেন। এমতাবস্থায় মন্টু বেপারির ছেলে ইমন বেপার(২৫) এর নেতৃত্বে ৮-১০ জন আমার ভাইয়ের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তার এই অবস্থা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীরা ধারালো ছেনদা, রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল এবং রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে পেছন থেকে এসে হঠাৎ করেই করিম বেপারীকে মোটরসাইকেলসহ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং পিটিয়ে জখম করতে থাকে। আমরা চিৎকার দিয়ে উঠলে তারা আহত করিম বেপারীকে ফেলে রেখেই পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পরে করিম বেপারীকে তার পরিবারের লোকজন এসে ভ্যানে করে প্রথমে জাজিরা থানায় নিয়ে পুলিশকে অবহিত করার পরে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনি এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে মন্টু বেপারির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ঢাকায় থাকি মাঝেমধ্যে মা অসুস্থ থাকায় তার দেখভালের জন্য গ্রামে আসি। এই ঘটনা সম্পর্কে আমি তেমন কিছুই জানিনা এমনকি আমার ছেলেও এই ঘটনায় জড়িত নয়। আমার সাথে তাদের দলীয় ঝামেলা থাকায় আমাকে ফাসানোর জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছে। আসলে তাদের দলের লোকজনই তাকে মেরেছে আমি এর কিছুই জানিনা।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা বিষয়টি জানার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে এবং তাদের গ্রামের বাড়ির এলাকায় পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে না আসায় মামলা করা যায়নি। অভিযোগ পেলেই মামলা দায়ের করার পাশাপাশি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।