
স্বপ্নের পদ্মাসেতুর কল্যানে দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত শরীয়তপুরের জাজিরার কৃষিপন্য এখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা “এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবেনা” শ্লোগানটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যাপক পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে। যা মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি প্রশংসা কুড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে।
কৃষিতে এই বিশেষ অবদান রাখায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে শরীয়তপুরের সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান এবং শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মতলবুর রহমানের পাশাপাশি জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: কামরুল হাসান সোহেল এবং জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: জামাল হোসেন দলগতভাবে পাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ২০২৩। আগামি (৩১-জুলাই) ঢাকার ওসমানী স্বৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে উক্ত পদক তুলে দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত (২০-জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শরীয়তপুর এবং জাজিরার এই চার কর্মকর্তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। চিঠিতে উক্ত কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে (কোড BPAA005) উল্লেখযোগ্য ও প্রশংসনীয় অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ২০২৩ এর জন্য তাদেরকে মনোনীত করা হয়েছে।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০২৩ সালের মার্চ মাসের হিসাব অনুযায়ী শরীয়তপুর জেলায় ৪ হাজার ৭ শত ২০ একর অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫৮০ একর জলাবদ্ধ জমি, ২৪৪১ একর চরাঞ্চলের জমি, রাস্তার দুই পাশে পরে থাকা ৭২ একর জমি এবং বসতভিটার চারপাশে পরে থাকা ৫৩৩ একর জমি রয়েছে।
এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক পতিত জমির পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণীর পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র জাজিরাতেই চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে ২ হাজার ৫ শত ৯২ একর অনাবাদি/পতিত জমি। এছাড়াও পদ্মাসেতুর মাধ্যমে জাজিরা থেকে অল্পকিছুদিনের মধ্যে ২ শত ১৬ মেট্রিকটন সবজি ইউরোপের কয়েকটি দেশসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। যার মধ্যে লাউ, কচু, কাঁচা মরিচ ও শসাসহ অন্তত ১০-১২ প্রজাতির সবজি রয়েছে।
জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: জামাল হোসেন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, আমরা আমরা স্যারদের নিয়ে দলগতভাবে আমাদের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছি। যা মিডিয়ার কল্যানে সকলেই জানতে পেরেছে। আজকে আমরা দলগতভাবেই বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ৩০২৩ এর জন্য মনোনীত হয়েছি। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের একটি প্রাপ্তি। যা আমাদের কাজ করতে আরও অনুপ্রাণিত করবে।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: কামরুল হাসান সোহেল জানান, আমরা আমাদের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী দলগতভাবে আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে গিয়েছি বিভিন্ন জায়গায় পতিত অবস্থায় থাকা অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসার জন্য। পাশাপাশি ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে আমাদের জাজিরায় উৎপাদিত সবজি পন্য রফতানি করার জন্য আমরা কাজ করে গিয়েছি। তারই স্বীকৃতি স্বরূপ আমরা এই পদকটি পাচ্ছি।